ইউক্রেন গত কয়েক মাসে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শক্তি শিল্পকে লক্ষ্য করে দীর্ঘ-পরিসরের ড্রোন হামলার মাধ্যমে প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ চালাচ্ছে। কিয়েভের উদ্দেশ্য রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত করে সামরিক লড়াইয়ে প্রতিরোধ গঠন করা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে ইউক্রেন অন্তত ৫৮টি হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার তেল রিফাইনারি, পাইপলাইন, পাম্পিং স্টেশন ও রপ্তানি টার্মিনালগুলিতে। হামলার ফলে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে রাশিয়ার রিফাইনিং ক্ষমতার প্রায় ১৭% বা দৈনিক ১.২ মিলিয়ন ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ হয়ে যায়, যা মাস শেষে বেড়ে ২১% বা ১.৪ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিনে পৌঁছায়।
উচ্চ-পরিসরের ড্রোন ব্যবহারের ফলে ইউক্রেনের লক্ষ্য ছিল রাশিয়ায় জ্বালানি যেমন ডিজেল ও পেট্রোলের ঘাটতি তৈরি করা, যাতে সামনের সারিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান প্রভাবিত হয়। ড্রোন হামলার ধরণ এবং ফ্রিকোয়েন্সি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মস্কোর পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের পর থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, রাশিয়ার তেল শিল্প এখনও সংকটাপন্ন অবস্থায় নয়। কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের বিশেষজ্ঞ সেরগেই ভাকুলেঙ্কো জানান, “সতত সফল হামলা না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার তেল রিফাইনারি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হবে না।” তবে ধারাবাহিক এবং সুনির্দিষ্ট হামলা চালাতে পারলে পরিস্থিতি গুরুতর হতে পারে।
রাশিয়ার জবাবে বলা হয়েছে, কোনো বহিরাগত শক্তি তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে পারবে না। রাশিয়ার কর্মকর্তারা এই হামলাকে ‘বিপজ্জনক উত্তেজনামূলক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এই ড্রোন অভিযানের তথ্য ও হামলার নকশা ইউকে ভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা Open Source Centre (OSC) দ্বারা সংগ্রহ করা হয়েছে। হামলার ভিডিও ফুটেজ এবং সাতজন ইউক্রেনীয় সূত্রের সাক্ষাৎকার থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য হামলার মধ্যে প্রিমর্স্ক, উস্ত-লুগা, আর্কাংগেলস্কের রিফাইনারি এবং ড্রুজবা পাইপলাইন উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, ইউক্রেনের এই অভিযানকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি “সবচেয়ে দ্রুত কার্যকর নিষেধাজ্ঞা” আখ্যা দিয়েছেন।
সূত্র: রয়টার্স, ওপেন সোর্স সেন্টার, কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টার

